নাচোলে বিদ্যালয়ের বই বিক্রিসহ নানা অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

নাচোল উপজেলা শিক্ষা

মোঃ মনিরুল ইসলাম, নাচোল:  চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বই বিক্রিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে। উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নে অবস্থিত এই বিদ্যালয়ের পূরণ বই, টিউবওয়েলের মালপত্র, পরিচালনা কমিটিকে অবহিত না করে গাছ বিক্রি, ইট বিক্রি, কর্মচারীদের হয়রানিসহ আরো অনেক অভিযোগ প্রধান শিক্ষককে ঘিরে।

জানা গেছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে গতবছরের বিভিন্ন শ্রেণীর পাঠ্যবই এবং বিদ্যালয়ের পুরাতন টিউবওয়েলের মালপত্র নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রির উদ্দেশ্যে একটি নসিমন ও একটি অটোরিকশা বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পৃথক দুটি স্থান সিংরইল বাজার ও শালালপুর মোড়ে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা নসিমন ও অটোরিকশাটিকে আটকিয়ে দেয় এবং পুলিশে খবর দেয়।

এদিকে মালামাল আটকের খবর প্রধান শিক্ষক জানতে পেরে বিদ্যালয়ের কেরানি বরকতউল্লাহকে দিয়ে মালপত্র বিক্রির বৈধতার জন্য তড়িঘড়ি করে রেজ্যুলেশন প্রস্তুতের চেষ্টা করলে তা আটকে দেন স্থানীয় ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন। নাসির উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে তিনি দ্রুতই বিদ্যালয়ে গিয়ে হাজির হন এবং পরিচালনা কমিটির সদস্য ও সভাপতিকে না জানিয়ে প্রধান শিক্ষককে রেজ্যুলেশন লিখতে দেখতে পান।

তিনি রেজ্যুলেশন লেখা বন্ধ করেন এবং অসম্পন্ন কপিটি তার কাছে রেখে দেন। এদিকে প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান রেজ্যুলেশনের কাজে সফল না হওয়ায় তিনিও তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বই চুরি হয়েছে মর্মে পুলিশকে ফোন দিয়ে তা জানান। খবর পেয়ে নাচোল থানা পুলিশ পৃথক দুটি স্থান থেকে নসিমন এবং অটোরিকশায় রক্ষিত টিউবওয়েলের মালপত্র ও পাঠ্যবই উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ তারেকুর রহমান সরকার জানান, স্থানীয়রা ফোন করে ঘটনাটি জানান, অন্যদিকে স্কুলের চুরি হওয়া বই ধরা পড়েছে বলে প্রধান শিক্ষকও ফোন করে জানান। খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ পুলিশ গিয়ে মালামাল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

অভিযোগের বিষয়ে মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান জানান, পরিচালনা কমিটি বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রি করেছে, তিনি কিছু জানেন না। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নীলুফা সরকারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি তিনি জেনেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দুলাল উদ্দীন খান জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন এবং এ বিষয়ে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ওই প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে যথাযথ জবাব দেওয়ার জন্য তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি তাজামুল হক জানান, সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ওই স্কুল চত্বরে অভিযোগ শুনানির বৈঠকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিযোগ লিপিবদ্ধ করে সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *