নির্বাণাধীন সেতুর পাশ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে মানববন্ধন

জাতীয় রাজনীতি

স্টাফ রিপোর্টার: চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট ও গোমস্তাপুর উপজেলার মহানন্দা নদীর ফোরাম ঘাটে নির্মাণাধীন সেতুর পাশ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নিয়মিত বালু উত্তোলন করছেন ঠিকাদার মো. আব্দুল মান্নান। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এলাকাবাসীর মাঝে। নির্মাণাধীন সেতু ও নদীর দুই পাশের আবাদি জমি, বাড়ি-ঘর পাকা স্থাপনা, নদীর তীরের জমি হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কায় মানববন্ধন করেছেন নদী তীরবর্তী ক্ষতিগ্রস্থ ও স্থানীয় জনতা।

শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে দলদলী ও বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দাদের অংশগ্রহণে নদীর তীরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নির্মাণাধীন সেতুর নিরাপত্তা রক্ষা করা জরুরি। সেতুর পাশে ড্রেজার মেশিন দিয়ে যেভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তাতে ভিত্তি দুর্বল হয়ে ভবিষ্যতে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করলে পরবর্তীতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় মানবন্ধন থেকে। তাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে প্রশাসন দায়ি থাকবে।

মানববন্ধনে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সেতুর পাশ থেকে বালু উত্তোলন স্পষ্টভাবে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন লঙ্ঘন। আইন অনুযায়ী- সেতু, সরকারী স্থাপনা ও আবাসিক এলাকার কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে বালু উত্তোলন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। অথচ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদেই এই অবৈধ বালু উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে ঠিকাদার।

মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দা মো. আসমাউল হোসেন বলেন, এই সেতুটা আমাদের স্বপ্নের সেতু। বালু উত্তোলনের জন্য শতকোটি টাকার সেতু হুমকির মুখে পড়ছে। সে সাথে নদীর তীরবর্তী আবাদি জমি, বসতভিঠা আছে সেগুলো হুমকির সম্মুখীন। এর আগে মোবাইল কোর্ট করে বালু উত্তোলন বন্ধ করে গেছিল। এখন আবার শুনছি ডিসি’র অনুমতিতে বালু উত্তোলন করছে।

মো. হারুন বলেন, সেতুর ঠিকাদার একাজের সাথে জড়িত আছে। সেতুর কাজ শুরুর সময় থেকে বালু উত্তোলন করে প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকার বালু বিক্রি করেছেন। আমরা গ্রামবাসি অভিযোগ দিলে মোবাইল কোর্ট করে বালু উত্তোলন বন্ধ করে। এখন আবার দুইটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলছে। বালু উত্তোলনের ফলে শতকোটি টাকার সেতু ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। এর পূর্বে আমাদের বংশীয় জমি নদীতে বিলিন হয়ে গেছে।

মো. সারোয়াত জাহান মাষ্টার বলেন, ব্রিজটা আমাদের বড় সম্পদ। সাথে নদীর তীরের ফসলী জমিও আমাদের সম্পদ। আমি চাই দুটাই যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয়। বালু উত্তোলন করতে গিয়ে যদি ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে প্রশাসন যাচাই বাচাই করে ব্যবস্থা নিবেন।

মো. মাসুদ রানা বলেন, সেতু নির্মাণের জন্য সরকার বাজেট দিয়েছে। ঠিকাদার কোথা থেকে বালু পাবে সেটা তার ব্যাপার। কিন্তু সে অবৈধ্য ভাবে সেতুর পাশ থেকে বালু তুলতে পারেন না। বালু উত্তোলনের জন্য সেতু যেমন ড়্গতিগ্রস্থ হতে পারে সে সাথে নদীর দুই তীরের আবাদি জমি ও বসতভিঠা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আমরা যেখানে উন্নয়নের জন্য সেতু চাইছি, সেখানে সেতুর গোড়ালিতেই ডোবানো হচ্ছে। শতকোটি টাকার প্রকল্পের পেছনে এমন বেআইনি কর্মকান্ড চরম দুর্নীতি ও লজ্জাজনক উদাহরণ। অবিলম্বে বালু উত্তোলন বন্ধ এবং দোষীদের শাস্তির দাবি করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *