ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (সিএমএম) বিচারক মোশাররফ হোসেন রোববার এ আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কৌঁসুলি নজরুল ইসলাম।
আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রীকে ফাঁসিয়েছেন এসআই সাজ্জাদ। তাঁর হেফাজতে থাকা এক হাজার ইয়াবা বড়ি দিয়ে ওই ছাত্রীকে বেআইনিভাবে আটক করেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও দেন।
এ জন্য এসআই সাজ্জাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আহসানুর রহমানকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দিয়েছেন।
জানতে চাইলে আহসানুর রহমান গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর খিলক্ষেতে ওই ছাত্রীর বাসায় অভিযান চালানো হয়। তখন তাঁর কাছ থেকে এক হাজার ইয়াবা উদ্ধার দেখানো হয়। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন এসআই সাজ্জাদ।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই অতিরিক্ত পরিচালক বলেন, জামিনে বের হওয়ার পর ওই ছাত্রী অভিযোগ করেন, তাঁকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন এসআই সাজ্জাদ। পরে আদালতের নির্দেশে তিনি ঘটনার তদন্ত করেন। তদন্তে উঠে আসে সেদিন ওই ছাত্রীর কাছ থেকে মাদক উদ্ধার করা হয়নি।
আহসানুর আরও বলেন, যে নারী এসআইয়ের মাধ্যমে ওই ছাত্রীর দেহ তল্লাশি করা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়, সেই এসআই রোকেয়া আক্তার লিখিতভাবে জানান, ওই দিন তিনি অভিযানে যাননি। ওই ছাত্রীকেও তিনি চেনেন না।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মহানগরের (উত্তর) উপপরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, তদন্তে উঠে এসেছে ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে এসআই সাজ্জাদ মিথ্যা মামলা দেন।
এদিকে এসআই সাজ্জাদ প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছেন, ওই ছাত্রীর কাছ থেকে এক হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলেই তিনি মামলা করেছেন। বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদের সময় বারবার আহসানুর রহমানকে তিনি বলেছিলেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন এসআই সাজ্জাদ। মিথ্যা মামলার কারণে আমাকে চার মাস জেল খাটতে হয়েছে। আমি তাঁর উপযুক্ত শাস্তি চাই।