সাহসী পুলিশ অফিসার মকবুলের লড়াই

জাতীয় ভোলাহাট উপজেলা সারা দেশ

স্টাফ রিপোর্টার: সৎ সাহসী দক্ষ কর্মঠ টকবগে যুবক ভোলাহাট থানায় কর্মরত পুলিশ অফিসার (এস.আই) মোঃ মকবুল হোসেন। সিরাজগঞ্জ জেলার শাহাজাতপুর উপজেলার রতনকান্তি গ্রামে পিতা মৃত্যু আনসার আলী ও মাতা মোসাঃ মোনুয়ারা বেগমের কোল জুড়ে পৃথিবীতে আসেন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন ২০১২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। রাজশাহী সারদায় প্রশিক্ষণ শেষে যোগ দেন রাজশাহী বোয়ালিয়া মডেল থানায়। সেখানে কর্মরত থাকা কালে ২০১৩ সালের ৩১ মার্চ রাজশাহী রানী বাজারে অভিযানে গিয়ে সন্ত্রাসীদের বোমার আক্রমনে দু’হাতের কব্জি পর্যন্ত উড়ে যায়। চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মৃত্যর সাথে পাঞ্জা লড়তে থাকেন তিনি।

এ সময় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা সামরিক হাসপাতালে পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে তিন মাস চিকিৎসার পর রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ৬ মাস চিকিৎসা গ্রহণ করেন। দীর্ঘদিন জীবন যুদ্ধে লড়াইয়ের পর কিছুটা সুস্থ্য হয়ে উঠলেও ফিরে পাননি দু’হাতের কব্জি পর্যন্ত বাঁকী অংশ। ডান হাতে কৃত্তিম ও বাম হাতের আঙ্গুল ছাড়াই আবারো যোগ দেন ২০১৪ সালে রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ।

অঙ্গহানি অবস্থায় দক্ষতার সাথে দায়িত্বশীল ভাবে পালন করে যান তাঁর উপর অর্পিত সরকারের দেয়া দায়িত্ব। অঙ্গহানির পরো সততা আর দক্ষতার সাথে পুলিশের নিয়মানুযায়ী দেশের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। দক্ষতা ও সাহসিকতার জন্য ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক (পিপিএম) লাভ করেন তিনি।

তিনি ভোলাহাট থানায় যোগদান করেন ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে। এ সময় সরকার মাদকের জিরো টলারেন্স ঘোষণা করলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার ছাইদুল হাসান (পিপিএম সেবা) দিক নির্দেশনায় ভোলাহাট থানার অফিসার ইনচার্জ সুমন কুমারের নেতৃত্বে মাদকের বিরুদ্ধে দক্ষতার সাথে অভিযান পরিচালনা করেন। এখন পর্যন্ত ভোলাহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদকের প্রায় ৩০ টি মামলা দায়ের করেন। আসামী গ্রেফতার করেন প্রায় ৫০জন। এছাড়া কৃষি প্রধান এলাকা হওয়ায় ভোলাহাটে গভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ দিয়ে ফসল উৎপাদন করেন কৃষকেরা। এ অঞ্চলে গভীর নলকূপের ট্রান্সফার চুরির উপদ্রব বেড়ে গেলে কৃষক চরম ক্ষতির মুখে পড়েন। ফলে অফিসার ইনচার্জ সুমন কুমারের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করেন এসআই মোঃ মকবুল হোসেন। অভিযান পরিচালনা করে সম্প্রতি সফলও হয়েছেন। উদ্ধার করেছেন ট্রান্সফারের মালামাল ও চুরির উপকরণ। গ্রেফতার করেছেন চোর। এঘটনায় প্রশংসা করেছেন খোদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার।

এ ব্যাপারে এসআই মোঃ মকবুল হোসেন জানান, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় রাজশাহী রানী বাজারে সন্ত্রাসীদের বোমা বিস্ফোরণে দু’হাতের কব্জি পর্যন্ত উড়ে যায়। দীর্ঘদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়েছি। দু’হাতের কব্জি হারিয়ে আবারো কাজে যোগদান করে সরকারের দেয়া দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করছি। হাত হারিয়ে গেলেও সরকারের দেয়া দায়িত্ব পালনে মনোবল দমে যায়নি। নিষ্ঠার সাথে সরকারের দেয়া দায়িত্ব পালন করছি। তিনি বলেন, জেলা পুলিশ সুপার স্যার ও ওসি স্যার আমার কাজের মূল্যায়ন করেন। আমি তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, যতদিন কর্মরত আছি নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করবো বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *