স্টাফ রিপোর্টার: মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার ছয় সন্তানের জননী বেগম (৯০)। তিনি গোহালবাড়ি ইউনিয়নের বীরেশ্বরপুর গ্রামের মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। একজন পরিত্যক্ত মায়ের প্রতিচ্ছবি হয়ে জীবনের শেষ অধ্যায় পার করছিলেন রা¯ত্মার পাশে ক্যানালের ধার ঘেঁষে নিঃসঙ্গ একটি নড়বড়ে খড়ের ঘরে।
সম্প্রতি তার এই অসহায় অবস্থার খবর প্রকাশ্যে আসলে বিষয়টি নজরে আসে ভোলাহাট উপজেলা প্রশাসনের। ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান অসহায় বেগমের ঘর তৈরির জন্য দুই বান্ডিল টিন এবং ছয় হাজার টাকার নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। একই সাথে বিষয়টি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় প্রতিনিধিদের নজরে আসলে তারা সার্বিক সহযোগিতায় ঘরটি নির্মাণ করে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান ফিতা কেটে বৃদ্ধাকে ঘর ও শুকনা খাবার দেন। পরবর্তীতে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের এমপি পদপ্রার্থী ড. মু. মিজানুর রহমান পরিদর্শন করে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেণ।
জানা যায়, স্বামী ইদ্রিস আলীর মৃত্যুর পর থেকে একাই জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন এই প্রবীণ নারী। তার তিন ছেলে ও তিন মেয়ে থাকলেও কেউ পাশে নেই। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে অবহেলা ও দারিদ্র্যই ছিল তার সঙ্গী। একাধিকবার অন্যত্র যাওয়ার প্রস্তাব পেলেও তিনি রাজি হননি। তিনি বলেছিলেন- এই মাটিতেই যেন মরতে পারি, এখানেই থাকবো।
নতুন ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত বেগম বলেন, আমি ভাবিনি এই বয়সে কেউ আমার কথা শুনবে। আল্লাহ যেন ওদের ভালো রাখে, যারা আমার মতো মানুষকে ঘর দিলো। এখন অন্তত বৃষ্টি-ঝড়ের ভয় নেই।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত এমপি প্রার্থী ড. মিজানুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কাজ করে আসছে। তারই একটি ছোট্ট অংশ হলো এইটা। ইউএনও মহোদয়সহ জামায়াতে ইসলামী ভোলাহাট উপজেলা শাখাকে ধন্যবাদ জানাই তারা এই মানবিক কাজে অংশগ্রহণ করার জন্য।
ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে এভাবে কেউ থাকতে পারে না। সাংবাদিকরা বিষয়টি সামনে এনেছেন, আর আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। যদি সমাজের সবাই সামান্য সহানুভূতি দেখায়, তাহলে আর কেউ অভুক্ত বা গৃহহীন থাকবে না।
