মোঃ মনিরুল ইসলাম,নাচোল: চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তে-ভাগা আন্দোলনের খ্যাত বিরঙ্গনা কিংবদন্তি বিপ্লবী মহিষি নেত্রী রাণী ইলামিত্রের ২১তম মৃত্যু বার্ষিকি পালিত হয়েছে।
শুক্রবার রানী ইলামিত্র সংসদ’র আয়োজনে উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের কেন্দুয়া পঞ্চানন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সকাল ১০টার দিক থেকে শুরু হয় বিভিন্ন আয়োজন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমনুরা থেকে নাচোল প্রবেশ মেইন রাস্তায় রাণী ইলামিত্র গেটে তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস। দুপুরে আদিবাসী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সহ সকল অতিথিদের জন্য কাঙ্গালী ভোজেরও আয়োজন করা হয়। পরে ইলামিত্র স্মৃতিতে মাল্যো দিয়ে স্মরণ করেন প্রধান অতিথি। বিকেল ২টার দিকে উপজেলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সবুজ হাসান এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ৪৪ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিয়াউর রহমান।
প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাণী ইলা মিত্র সংসদ এর সভাপতি শ্রী বিধান শিং।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন, উপজেলা পরিষদের, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান জান্নাতুন নাঈম মুন্নি, নেজামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি শ্রী নিতাই চন্দ্র বর্মন, সাবেক ছাত্রনেতা আবু রেজা মোস্তফা কামাল শামীম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।
এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, চার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক, শ্রমিক লীগ, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের রানীমাভক্তবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ সন পর্যন্ত ততকালীন ভূমি মালিকদের সাথে বর্গচাষিদের জমিতে ফসল উৎপাদনের ন্যয্যতা নিয়ে জটিলতার বিষয়ে জমিদার পত্নী হয়েও বরেন্দ্র অঞ্চলে তাঁ স্বামী শ্রী রমেন মিত্রের জমিদারীতে বর্গাচাষিদের উৎপাদন খরচ হিসেবে এক ভাগ, ফসলের বর্গাদার হিসেবে একভাগ অবশিষ্ট একভাগ জমি মালিকের এ হিসেবটির নামই তে—ভাগা। এটিই পরবর্তীতে তে—ভাগা আন্দোলন হিসেবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। ততকালীন পূর্বপাকিস্তান সরকার কমরেড ইলামিত্রের ওই আন্দোলনকে রাজনৈতিক অর্থাৎ রাস্ট্র বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করে। ফলে বরেন্দ্র অঞ্চলের আদিবাসী—মুসলিম বর্গাদারদের উপর পূর্ব পাকিস্তানী পুলিশের নির্যাতন নেমে আসে। অবশেষে রানী ইলামিত্রকে পাকিস্তান পুলিশ রহনপুর স্টেশন এলাকা থেকে আটক করে।
এরপর থেকে বরেন্দ্র অঞ্চল নাচোলে রাণী ইলামিত্র ক্ষ্যতি লাভ করেন।